back  

রামচন্দ্র মাঝি
Ramchandra Majhi

নাম: শ্রী রামচন্দ্র মাঝি

গ্রাম, পো: কুলডাঙা

জেলা: হাওড়া

 

রামচন্দ্র মাঝি বাড়ী কুলডাঙা আশ্রমের কাছেই। খুবই কাছে। এককথায় আশ্রমের পড়শী বলা যেতে পারে। তাঁর সমৃতিচারণে যা ভেসে এসেছে তা কখনো কখনো জীবন তরীর পালে হাওয়া লাগার মতো।

 

ছেলেবেলা থেকেই গুরুদেবকে দেখেছেন। ওনার কথায়: ছেলেবেলায় যেমন হয়, দেখতাম আশ্রমে একজন সন্ন্যাসী থাকেন। পূজো, উৎসব এইসবের একটা আকর্ষণ ছিলো। তার থেকেও বড় আকর্ষণ আশ্রমের প্রসাদ পাওয়া, ভোগ খাওয়া। উনি ডাকতেন,-গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে কুশল জিজ্ঞাসা করতেন এসবের মধ্যে একটা অনাবিল স্নেহঝরণা, যেন বয়ে যেতো। খুব ভালো বাসতেন। উৎসবের সময় নানা কাজে আমার ডাক পড়তো। তার থেকেও অনেক কিছু শিখেছি জেনেছি। গুরুগৃহে কিভাবে আগেকার মুনি ঋষিরা শিষ্য-শিষ্যাদের শেখাতেন,- তা শুনেছি কিন্তু ওনার কাছে থাকলে মনে হোতো এরকমভাবে এখন কেন শেখানো হয় না?

 

ওনার কাছে প্রশ্ন ছিল : কিভাবে শেখাতেন?

 

উনি বলতে থাকলেন : শেখানো মানে হাতে কলমে শেখানো। নিজে করে অন্যকে শেখাতেন।

 

আমার সংযোজন : আপনি আচরি ধর্ম পড়েরে শিখাও?

 

উনি বল্লেন জ্ঞঠিক বলেছেন, এক্কেবারে হক কথা বলেছেন। যেমন ধরুন এখানে, মানে কুলডাঙা আশ্রমে উনি দোলপূর্ণিমার সময় বিশেষ পূজো করতেন। এইধরনের পূজো আমি অন্য কোথাও দেখিনি।

কিরকম পূজো বা পূজোর পদ্ধতি কিরকম জিজ্ঞাসা করায় উনি বলতে থাকলেন: ৯ দিন/রাত্রি ধরে এই পূজো চলতো। ৯টা ঘট বসানো হোতো। এবং ঘটে জল ভরতে হোতো আশ্রমের লাগোয়া পুকুর থেকে। কিন্তু এই ঘট ভরা ঠিক সাধারণভাবে ঘটে জলভরার মতো নয়।

 

আমাদের এক একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হোতো এক একটি ঘট ভরার। এই নজন কে কে হবে, তাও উনি আমাদের মধ্যে থেকে বেছে দিতেন। তারপর সেই ঘট মাথায় করে সাঁতরে পুকুরের মাঝখানে ডুবে এক নিঃশ্বাসে জল নিতে হোতো এবং সেইভাবে সাঁতার কেটে আসতে হোতো। এবং তারপর ঘট বসানোর পর্ব চলত। এটা উনি নিজে সাঁতার কেটে আমাদের নজনের সঙ্গে সমানভাবে সাঁতার কেটে ডুবে ঘট কিভাবে নিয়ে আসতে হবে দেখাতেন। ঘট বসানোর পর তারপর কিভাবে পূজো করতে হয় তাও শেখাতেন।

 

 

ঠিক এইরকম উৎসবের সময় একটা ঘটনা ঘটে -  উৎসবের সময় অনেক ফুলের দরকার হোতো। তাই হাওড়ার জগন্নাথ ঘাট থেকে বড় ঝাঁকা মাথায় করে ফুল নিয়ে আসতে হতো। এই বিশেষ দায়িত্বটা আমাকেই পালন করতে হোতো। হাওড়া থেকে ট্রেনে তারপর হেঁটে ফুলের বোঝা দুহাতে ধরে নিয়ে কুলডাঙা ফিরছি তখন অনেক রাত্রির হঠাৎ রাস্তার ধার থেকে ৪-৫ টা কুকুর আমাকে ঘিরে ধরে চেঁচাতে থাকে। আমি আরো জোরে হাঁটতে থাকি। কিন্তু একটা কুকুর কিছুতেই সঙ্গ ছাড়ে না ,আমার পায়ে কামড় দেয়। আমি পা দিয়ে ঠেলতে থাকি, মাথার ঝাঁকা, হাত দিয়ে আরো শক্ত করে ধরি যাতে ফুলগুলো কিছুতেই না পরে যায়। এইভাবে রক্তাক্ত অবস্থায় যখন কুলডাঙা আশ্রমে পৌঁছই  তখন দেখি আশ্রমে বাবা না ঘুমিয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করে আছেন, দেখামাত্র বললেন জ্ঞ কিরে বাবা এসেছিস আয়জ্ঞ। তখন পায়ে খুব যন্ত্রণা হচ্ছে, আমি দেখাবার আগেই উনি বল্লেন, জ্ঞকুকুরে তোকে কামড়েছে খুব কষ্ট হচ্ছে, ঝাঁকা মাথা থেকে ফেলিসনি তো?জ্ঞ তারপরই বললেন, যা বাবা আশ্রমের পুকুরে গিয়ে পা আর রক্ত ধুয়ে ভালো করে স্নান করে আয়। তারপর স্বগোতক্তির মতো বললেন কুকুর মহাকালের প্রতিক, তোকে কামরেছে তো, তাই........।

 

কিন্তু বাড়ীতে ফিরে পাড়ার লোকজন সবাই বলছে পাশের গ্রামের ওঝার কাছে যেতে। যথারীতি গেলাম, কিন্তু বাবাকে এ বিষয়ে কিছুই জানাই নি।

 

ওঝার কাছে যেতে ওঝা বললে: ওষুধ দিতে পারি কালো পাথরবাটি খুঁজে নিয়ে এসো। সারা গ্রাম ঘুরে কারো কাছে কালো পাথর বাটি পাওয়া গেল না। ওষুধ খাওয়াও হল না। এরপরে যেদিন আশ্রমে গেলাম। বাবা ঢুকতেই বললেন, জ্ঞকিরে বাবা কালো পাথর বাটি পেলি না? যাকগে না পেয়েছিস ভালোই হয়েছে। তোকে আর কিচ্ছু করতে হবে না। কোনো ওষুধও খেতে হবে না। তোর কোনো ভয় নেইজ্ঞ। আমি মনে মনে ভাবতে থাকলাম বাবা কি করে কালোপাথর বাটির কথা বললেন। এটা তো আর কেউ জানে না। শুধু আমি আর ওঝা জানি। আস্তে আসতে বিশ্বাস দানা বাঁধতে থাকে। এরকম আরোও কত ঘটনা আছে, বলে কি শেষ করা যায়।

 

জানেন আমার ছেলের বিয়ের ঠিক হয়ে গিয়েছিল। দিন স্থির হয়ে গেছে। যোগার যন্ত্র চলছে। বাবার কাছে গেলাম, বাবার আশীর্বাদ নেওয়ার জন্য। তখন বাবা রমাণাথপুর আশ্রমে ছিলেন। শুনে কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন। তারপর বললেন, জ্ঞ ওর তো বিয়ে হবে নাজ্ঞ। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, জ্ঞসেকি বাবা সব যে ঠিক ঠাক হয়ে গেছেজ্ঞ। বাবা আমার দিকে তাকালেন, আবার বললেন জ্ঞওর বিয়ে হবে না রে বাবাজ্ঞ। ঘটনা চক্রে সেদিনই আমার ছেলে বাড়ী থেকে কাউকে কিছু না জানিয়ে এক জামাকাপড়েই বেরিয়ে গিয়েছিল। অনেক দিন কোনো খবরই পাই নি। নিরুদ্দেশ হয়ে গেল। অনেক পরে জানতে পেরেছি ,সে সন্ন্যাসী হয়ে গেছে। হৃষিকেশে থাকে, কোনো এক আশ্রমের বিশেষ দায়িত্বে আছে। আমাদের ছেলে, আমরা বুঝতে পারি নি, তার মধ্যে সন্ন্যাস যোগ আছে। এখন মনে হয় বাবা সবই জানতেন, আমাদের কিছভ্রক্ষঢ়প১নাম   : শ্রী রামচন্দ্র মাঝি

গ্রাম+পো: কুলডাঙা

জেলা  : হাওড়া

 

রামচন্দ্র মাঝি বাড়দ্দসতক্ষ  

              

জানেন আমার ছেলের বিয়ের ঠিক হয়ে গিয়েছিল। দিন স্থির হয়ে গেছে। যোগার যন্ত্র চলছে। বাবার কাছে গেলাম, বাবার আশীর্বাদ নেওয়ার জন্য। তখন বাবা রমাণাথপুর আশ্রমে ছিলেন। শুনে কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন। তারপর বললেন, জ্ঞ ওর তো বিয়ে হবে নাজ্ঞ। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, জ্ঞসেকি বাবা সব যে ঠিক ঠাক হয়ে গেছেজ্ঞ। বাবা আমার দিকে তাকালেন, আবার বললেন জ্ঞওর বিয়ে হবে না রে বাবাজ্ঞ। ঘটনা চক্রে সেদিনই আমার ছেলে বাড়ী থেকে কাউকে কিছু না জানিয়ে এক জামাকাপড়েই বেরিয়ে গিয়েছিল। অনিক দিন কোনো খবরই পাই নি। নিরুদ্দেশ হয়ে গেল। অনেক পরে জানতে পেরেছি ,সে সন্ন্যাসী হয়ে গেছে। হৃষিকেশে থাকে, কোনো এক আশ্রমের বিশেষ দায়িত্বে আছে। আমাদের ছেলে, আমরা বুঝতে পারি নি, তার মধ্যে সন্ন্যাস যোগ আছে। এখন মনে হয় বাবা সবই জানতেন, আমাদের কিছু বলেন নি। বাবার অশেস কৃপা। তার কৃপাতেই আমি আর আমার স্ত্রী, কুলডাঙা আশ্রমে দেখাশোনা করার দায়িত্ব পেয়েছি। রোজ আশ্রম দেকাশোনা করা পরিস্কার রাখা। পূজো-পাঠের আয়োজন করা এসব আমরা করি।এসব কাজের দায়িত্ব ভার সবাই তো পায় না। এখন বুঝতে পারি তিনি আমাদের বেছেছেন তাঁর এই কাজের জন্য।